১০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যশোরের বেনাপোলে অস্ত্র ঠেকিয়ে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ফিল্মি কায়দায় অপহরণের দুই দিন পর পুলিশের অভিযানে উদ্ধার

ডেস্ক নিউজ

ইয়ানূর রহমান :

এ ঘটনায় আটক হয়েছে ঘটনার প্রধান আসামি সুমন হোসেন (২২)।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে আটককৃত আসামীকে যশোর আদালতে প্রেরণ করা
হয়েছে। অপরদিকে উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিরাপদ হেফাজতে
প্রেরণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।আটককৃত সুমন বেনাপোল পোর্ট থানার
দিঘীরপাড় গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে।

ঘটনাটি ঘটেছিল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল
কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের সামনে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর)
ভুক্তভোগীর মা শিখা খাতুন বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের
করেন।

অভিযোগে বলা হয়, কাগমারী গ্রামের জাহিদ হোসেনের মেয়ে জাকিয়া পারভীন (১৫)
কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। অর্ধবার্ষিক
পরীক্ষা শেষে মা শিখা খাতুন তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় স্থানীয় দূর্বৃত্ত
সুমন হোসেন (২২), তার সহযোগী জিসান (২২), নাইমুর (২৬) সহ আরও ১০-১২ জন
মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তাদের পথরোধ করে।

এসময় শিখা খাতুনকে মারধর করে জিসান ও নাইমুর। পরে সুমন অস্ত্রের মুখে
জাকিয়াকে জোর করে সাদা রঙের প্রাইভেটকারে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। শিখা
খাতুনের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলেও দুর্বৃত্তরা ছাত্রীটিকে নিয়ে
পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর জাকিয়ার মা শিখা খাতুন ৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত
অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর তদন্তভার পান এসআই (নিঃ)
মোহাম্মাদ মামুন শেখ। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সুমন হোসেনকে
আটক করে এবং অপহৃত স্কুলছাত্রী জাকিয়া পারভীনকে উদ্ধার করে।

কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন,
পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্কুলছাত্রীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করা
সত্যিই ভয়াবহ ঘটনা। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত সব আসামিকে গ্রেফতার ও
কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে থানা অভ্যন্তরে থাকা উদ্ধারকৃত ভিকটিম জাকিয়া জানায়, আমার মা
সুমনের বিরুদ্ধে অপহরনের মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। তার সাথে দীর্ঘদিনের প্রেম
থাকায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। এখানে তাদের সাথে
অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। সে তার স্বামীকে যাতে জেলখানায় না দেওয়া হয় এবং
তারা যাতে সুখে সংসার করতে পারে এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে। নইলে
সে আত্মহত্যা করে মারা যাবে।

বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, স্কুলছাত্রী
অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পরই পুলিশ অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার
গভীর রাতে প্রধান আসামি সুমনকে গ্রেফতার এবং অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করা
হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে আটককৃত আসামীকে যশোর আদালতে প্রেরণ
করা হয়েছে। অপরদিকে উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিরাপদ
হেফাজতে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। একইসাথে অন্য আসামিদের
গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৮:৪১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যশোরের বেনাপোলে অস্ত্র ঠেকিয়ে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ফিল্মি কায়দায় অপহরণের দুই দিন পর পুলিশের অভিযানে উদ্ধার

আপডেট: ০৮:৪১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইয়ানূর রহমান :

এ ঘটনায় আটক হয়েছে ঘটনার প্রধান আসামি সুমন হোসেন (২২)।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে আটককৃত আসামীকে যশোর আদালতে প্রেরণ করা
হয়েছে। অপরদিকে উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিরাপদ হেফাজতে
প্রেরণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।আটককৃত সুমন বেনাপোল পোর্ট থানার
দিঘীরপাড় গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে।

ঘটনাটি ঘটেছিল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল
কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের সামনে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর)
ভুক্তভোগীর মা শিখা খাতুন বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের
করেন।

অভিযোগে বলা হয়, কাগমারী গ্রামের জাহিদ হোসেনের মেয়ে জাকিয়া পারভীন (১৫)
কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। অর্ধবার্ষিক
পরীক্ষা শেষে মা শিখা খাতুন তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় স্থানীয় দূর্বৃত্ত
সুমন হোসেন (২২), তার সহযোগী জিসান (২২), নাইমুর (২৬) সহ আরও ১০-১২ জন
মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তাদের পথরোধ করে।

এসময় শিখা খাতুনকে মারধর করে জিসান ও নাইমুর। পরে সুমন অস্ত্রের মুখে
জাকিয়াকে জোর করে সাদা রঙের প্রাইভেটকারে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। শিখা
খাতুনের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলেও দুর্বৃত্তরা ছাত্রীটিকে নিয়ে
পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর জাকিয়ার মা শিখা খাতুন ৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত
অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর তদন্তভার পান এসআই (নিঃ)
মোহাম্মাদ মামুন শেখ। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সুমন হোসেনকে
আটক করে এবং অপহৃত স্কুলছাত্রী জাকিয়া পারভীনকে উদ্ধার করে।

কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন,
পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্কুলছাত্রীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করা
সত্যিই ভয়াবহ ঘটনা। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত সব আসামিকে গ্রেফতার ও
কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে থানা অভ্যন্তরে থাকা উদ্ধারকৃত ভিকটিম জাকিয়া জানায়, আমার মা
সুমনের বিরুদ্ধে অপহরনের মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। তার সাথে দীর্ঘদিনের প্রেম
থাকায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। এখানে তাদের সাথে
অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। সে তার স্বামীকে যাতে জেলখানায় না দেওয়া হয় এবং
তারা যাতে সুখে সংসার করতে পারে এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে। নইলে
সে আত্মহত্যা করে মারা যাবে।

বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, স্কুলছাত্রী
অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পরই পুলিশ অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার
গভীর রাতে প্রধান আসামি সুমনকে গ্রেফতার এবং অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করা
হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে আটককৃত আসামীকে যশোর আদালতে প্রেরণ
করা হয়েছে। অপরদিকে উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিরাপদ
হেফাজতে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। একইসাথে অন্য আসামিদের
গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।