০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

রোজা শুরুর আগেই লেবু-শসার-বেগুনে দামে আগুন

নিউজ ডেস্ক

কাল বাদে পরশু শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। রহমত, বরকত ও নাজাতের এ মাসে মানব জীবনে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করার পরিবর্তে দেশের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী মেতে উঠেন অতিরিক্ত মুনাফার নেশায়। তাতে চরম বেকায়দায় পড়েন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

রমজান সামনে রেখে প্রতি বছরই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্বেও কাঁচাবাজারের বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ বেগুন, শসা, লেবুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। মাছ, মুরগী ও গরু-ছাগলের মাংসের দামও ঊর্ধ্বমুখী। তবে খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি, গুড় প্রভৃতি পণ্যের দাম এখনও বাড়েনি। আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে এসব পণ্য। পাশাপাশি ভোজ্যতেল সয়াবিনের সংকট এখনও কাটেনি। দামও রাখা হচ্ছে বেশি।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

রাজধানীর কমলাপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। কয়েক দিন আগেও যে লেবুর হালি ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সে লেবুর একটির দামই ২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে শসার দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তবে এখনও স্থিতিশীল রয়েছে শীতকালীন সবজির বাজার। ফুলকপি, গাজর, টমাটো, সিম মিলছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে।

গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়, যা আগে ছিল ১৮০-২০০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম বেড়ে ২৮০-৩১০ টাকায় পৌঁছেছে। মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, রোজার শুরুতে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকে, তাই দাম বাড়তে থাকে।

মুরগির পাশাপাশি গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে কিছুটা কম ছিল। আর খাসির মাংসের দাম প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকায় পৌঁছেছে। ছাগলের মাংসও বিক্রি হচ্ছে ১০৫০-১১০০ টাকায়। মাছের দামেও কিছুটা বৃদ্ধি দেখা গেছে। চিংড়ি, কই, শিং, তেলাপিয়া, রুই ও পাঙাশ মাছের দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। তবে আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজির দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।

রোজায় বেশি ব্যবহৃত পণ্যের মধ্যে খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে। সরকারের খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোয় সরবরাহ বেড়েছে, ফলে এক মাসের ব্যবধানে খেজুরের দাম কেজিতে ২০-২০০ টাকা কমেছে। ছোলার দামও ১৫ টাকা কমে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম আগের মতোই আছে, মানভেদে চিড়া ৭০-৮০ টাকা, আখের গুড় ১৪০-১৮০ টাকা, খেজুরের গুড় ২৫০-৩০০ টাকা এবং মুড়ি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আগের চড়া দরেই স্থিতিশীল মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম। ব্যবসায়ীদের দাবি, ভারত থেকে আমদানির প্রভাব পড়েনি বাজারে। কেননা যৌক্তিক দামে একই মানের চাল আনা যায়নি। তবে সয়াবিন তেলের বাজারে এখনও সরবরাহ সংকট রয়েছে। বাজার ঘুরে কিছু দোকানে মাত্র কয়েক বোতল সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। ভোক্তারা অভিযোগ করেছেন— রোজার আগেই সয়াবিন তেল কিনতে তাদের বিভিন্ন দোকান ঘুরতে হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৪:৪৫:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১০

রোজা শুরুর আগেই লেবু-শসার-বেগুনে দামে আগুন

আপডেট: ০৪:৪৫:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কাল বাদে পরশু শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। রহমত, বরকত ও নাজাতের এ মাসে মানব জীবনে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করার পরিবর্তে দেশের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী মেতে উঠেন অতিরিক্ত মুনাফার নেশায়। তাতে চরম বেকায়দায় পড়েন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

রমজান সামনে রেখে প্রতি বছরই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্বেও কাঁচাবাজারের বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ বেগুন, শসা, লেবুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। মাছ, মুরগী ও গরু-ছাগলের মাংসের দামও ঊর্ধ্বমুখী। তবে খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি, গুড় প্রভৃতি পণ্যের দাম এখনও বাড়েনি। আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে এসব পণ্য। পাশাপাশি ভোজ্যতেল সয়াবিনের সংকট এখনও কাটেনি। দামও রাখা হচ্ছে বেশি।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

রাজধানীর কমলাপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। কয়েক দিন আগেও যে লেবুর হালি ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সে লেবুর একটির দামই ২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে শসার দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তবে এখনও স্থিতিশীল রয়েছে শীতকালীন সবজির বাজার। ফুলকপি, গাজর, টমাটো, সিম মিলছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে।

গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়, যা আগে ছিল ১৮০-২০০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম বেড়ে ২৮০-৩১০ টাকায় পৌঁছেছে। মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, রোজার শুরুতে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকে, তাই দাম বাড়তে থাকে।

মুরগির পাশাপাশি গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে কিছুটা কম ছিল। আর খাসির মাংসের দাম প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকায় পৌঁছেছে। ছাগলের মাংসও বিক্রি হচ্ছে ১০৫০-১১০০ টাকায়। মাছের দামেও কিছুটা বৃদ্ধি দেখা গেছে। চিংড়ি, কই, শিং, তেলাপিয়া, রুই ও পাঙাশ মাছের দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। তবে আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজির দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।

রোজায় বেশি ব্যবহৃত পণ্যের মধ্যে খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে। সরকারের খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোয় সরবরাহ বেড়েছে, ফলে এক মাসের ব্যবধানে খেজুরের দাম কেজিতে ২০-২০০ টাকা কমেছে। ছোলার দামও ১৫ টাকা কমে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম আগের মতোই আছে, মানভেদে চিড়া ৭০-৮০ টাকা, আখের গুড় ১৪০-১৮০ টাকা, খেজুরের গুড় ২৫০-৩০০ টাকা এবং মুড়ি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আগের চড়া দরেই স্থিতিশীল মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম। ব্যবসায়ীদের দাবি, ভারত থেকে আমদানির প্রভাব পড়েনি বাজারে। কেননা যৌক্তিক দামে একই মানের চাল আনা যায়নি। তবে সয়াবিন তেলের বাজারে এখনও সরবরাহ সংকট রয়েছে। বাজার ঘুরে কিছু দোকানে মাত্র কয়েক বোতল সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। ভোক্তারা অভিযোগ করেছেন— রোজার আগেই সয়াবিন তেল কিনতে তাদের বিভিন্ন দোকান ঘুরতে হচ্ছে।