০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইউরোপকে হুঁশিয়ারি মস্কোর

ডেস্ক নিউজ

রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউরোপকে সম্পদ দখলের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাশিয়া বলেছে, তাদের সম্পদ দখলের চেষ্টা করলে যেকোনো ইউরোপীয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি পশ্চিমা বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কয়েক শ বিলিয়ন ডলার মূল্যের রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে সহায়তা করার নতুন উপায় খুঁজছে।

২০২২ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন নিষিদ্ধ করে এবং রাশিয়ার ৩০০ থেকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার জব্দ করে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন চান, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যয় মেটানোর জন্য রাশিয়ার জব্দ করা অর্থ ব্যবহার করার নতুন উপায় খুঁজে বের করুক ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

মার্কিন গণমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা থাকা রাশিয়ার অর্থ ব্যবহার করে ইউক্রেনের জন্য ক্ষতিপূরণ ঋণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে ইউরোপীয় কমিশন।

এ প্রসঙ্গে সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, রাশিয়ার সম্পদ দখল করলে এই শতকের শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলোকে তাড়া করবে রাশিয়া। এর পাশাপাশি যারা রাশিয়ার সম্পদ দখলে জড়িত থাকবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোকেও ছাড়া হবে না। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া সম্ভাব্য সব উপায়ে, সব আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আদালতে এবং আদালতের বাইরেও ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে তাড়া করবে। মেদভেদেভ বর্তমানে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রাশিয়ার দাবি, তাদের সম্পদ দখল মানে পশ্চিমাদের চুরি করা। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বন্ড ও মুদ্রার ওপর আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর বক্তব্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধে ইউক্রেন ধ্বংসের জন্য রাশিয়াই দায়ী। তাই মস্কোর সঙ্গে জোর করে হলেও ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। তবে কিছু ব্যাংকার সতর্ক করে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ জব্দের নজির বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে পশ্চিমা দেশগুলোর বন্ড কেনায় নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর বিনিয়োগে আস্থা কমতে পারে।

মেদভেদেভ এ মাসের শুরুর দিকে বলেছিলেন, রাশিয়া আরও ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখল করবে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের সম্পদ দখলের পথেও হাঁটবে। এর আগে লন্ডন জানায়, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে সংগৃহীত প্রায় ১৩০ কোটি ডলার ইউক্রেনের অস্ত্র কেনায় তারা ব্যয় করেছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, পশ্চিমারা রাশিয়ার অর্থনীতিতে মোট ২৮৫ বিলিয়ন ডলারের প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ করেছে। রাশিয়ার সম্পদ দখল হলে পশ্চিমাদের এ বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৫:০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইউরোপকে হুঁশিয়ারি মস্কোর

আপডেট: ০৫:০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউরোপকে সম্পদ দখলের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাশিয়া বলেছে, তাদের সম্পদ দখলের চেষ্টা করলে যেকোনো ইউরোপীয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি পশ্চিমা বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কয়েক শ বিলিয়ন ডলার মূল্যের রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে সহায়তা করার নতুন উপায় খুঁজছে।

২০২২ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন নিষিদ্ধ করে এবং রাশিয়ার ৩০০ থেকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার জব্দ করে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন চান, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যয় মেটানোর জন্য রাশিয়ার জব্দ করা অর্থ ব্যবহার করার নতুন উপায় খুঁজে বের করুক ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

মার্কিন গণমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা থাকা রাশিয়ার অর্থ ব্যবহার করে ইউক্রেনের জন্য ক্ষতিপূরণ ঋণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে ইউরোপীয় কমিশন।

এ প্রসঙ্গে সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, রাশিয়ার সম্পদ দখল করলে এই শতকের শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলোকে তাড়া করবে রাশিয়া। এর পাশাপাশি যারা রাশিয়ার সম্পদ দখলে জড়িত থাকবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোকেও ছাড়া হবে না। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া সম্ভাব্য সব উপায়ে, সব আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আদালতে এবং আদালতের বাইরেও ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে তাড়া করবে। মেদভেদেভ বর্তমানে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রাশিয়ার দাবি, তাদের সম্পদ দখল মানে পশ্চিমাদের চুরি করা। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বন্ড ও মুদ্রার ওপর আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর বক্তব্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধে ইউক্রেন ধ্বংসের জন্য রাশিয়াই দায়ী। তাই মস্কোর সঙ্গে জোর করে হলেও ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। তবে কিছু ব্যাংকার সতর্ক করে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ জব্দের নজির বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে পশ্চিমা দেশগুলোর বন্ড কেনায় নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর বিনিয়োগে আস্থা কমতে পারে।

মেদভেদেভ এ মাসের শুরুর দিকে বলেছিলেন, রাশিয়া আরও ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখল করবে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের সম্পদ দখলের পথেও হাঁটবে। এর আগে লন্ডন জানায়, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে সংগৃহীত প্রায় ১৩০ কোটি ডলার ইউক্রেনের অস্ত্র কেনায় তারা ব্যয় করেছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, পশ্চিমারা রাশিয়ার অর্থনীতিতে মোট ২৮৫ বিলিয়ন ডলারের প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ করেছে। রাশিয়ার সম্পদ দখল হলে পশ্চিমাদের এ বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।