১২:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

চীনা পণ্যের ওপর ১০০% শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা ট্রাম্পের

নিউজ ডেস্ক

চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শুল্ক বিদ্যমান ৩০ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে যোগ হবে। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে কয়েক মাসের বাণিজ্য যুদ্ধের বিরতির পর এক নতুন সংঘাতের সূচনা করল। খবর সিএনএনের।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ অক্টােবর) বিকেলে ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে বলেন, “আমেরিকা চীনের ওপর বর্তমানে প্রযোজ্য শুল্কের অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এছাড়া ১ নভেম্বর থেকে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার রপ্তানিতেও কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে।”

ট্রাম্পের এই ঘোষণা মূলত বেইজিং সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে — যেখানে চীন তাদের ‘রেয়ার আর্থ’ বা বিরল খনিজ উপাদানের রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। এসব খনিজই আধুনিক ইলেকট্রনিক পণ্যের মূল কাঁচামাল।

ফলে ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্ধারিত বৈঠকও বাতিল করেছেন বলে মার্কিন প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর মার্কিন শেয়ারবাজারে তীব্র পতন ঘটে। ডাও জোন্স সূচক পড়ে ৮৭৮ পয়েন্ট (১.৯ শতাংশ), এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমে ২.৭ শতাংশ, আর নাসডাক সূচক ধসে পড়ে ৩.৫ শতাংশ।

বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, এ পদক্ষেপ ২০২৩ সালের বসন্তের মতো আরেকটি বাণিজ্যিক ধাক্কা সৃষ্টি করবে, যখন চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বেড়ে ১৪৫ শতাংশে পৌঁছেছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি অর্থনীতি। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মেক্সিকো আমেরিকার প্রধান রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে, তবুও যুক্তরাষ্ট্র এখনও শত শত বিলিয়ন ডলারের পণ্যের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল।

চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় ইলেকট্রনিক্স, পোশাক এবং আসবাবপত্র। ট্রাম্প দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এখনো বিদেশে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে।

গত মে মাসে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে শুল্ক কমিয়ে একধরনের বাণিজ্যিক স্বস্তি সৃষ্টি করেছিল। চীন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে, আর যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করে।

এই সমঝোতার পর দুই দেশের বাজারে উল্লাস দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা আবার সেই স্বস্তিকে ধ্বংস করে দিল।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১১:৫১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
৩৯

চীনা পণ্যের ওপর ১০০% শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা ট্রাম্পের

আপডেট: ১১:৫১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শুল্ক বিদ্যমান ৩০ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে যোগ হবে। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে কয়েক মাসের বাণিজ্য যুদ্ধের বিরতির পর এক নতুন সংঘাতের সূচনা করল। খবর সিএনএনের।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ অক্টােবর) বিকেলে ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে বলেন, “আমেরিকা চীনের ওপর বর্তমানে প্রযোজ্য শুল্কের অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এছাড়া ১ নভেম্বর থেকে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার রপ্তানিতেও কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে।”

ট্রাম্পের এই ঘোষণা মূলত বেইজিং সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে — যেখানে চীন তাদের ‘রেয়ার আর্থ’ বা বিরল খনিজ উপাদানের রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। এসব খনিজই আধুনিক ইলেকট্রনিক পণ্যের মূল কাঁচামাল।

ফলে ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্ধারিত বৈঠকও বাতিল করেছেন বলে মার্কিন প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর মার্কিন শেয়ারবাজারে তীব্র পতন ঘটে। ডাও জোন্স সূচক পড়ে ৮৭৮ পয়েন্ট (১.৯ শতাংশ), এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমে ২.৭ শতাংশ, আর নাসডাক সূচক ধসে পড়ে ৩.৫ শতাংশ।

বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, এ পদক্ষেপ ২০২৩ সালের বসন্তের মতো আরেকটি বাণিজ্যিক ধাক্কা সৃষ্টি করবে, যখন চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বেড়ে ১৪৫ শতাংশে পৌঁছেছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি অর্থনীতি। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মেক্সিকো আমেরিকার প্রধান রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে, তবুও যুক্তরাষ্ট্র এখনও শত শত বিলিয়ন ডলারের পণ্যের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল।

চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় ইলেকট্রনিক্স, পোশাক এবং আসবাবপত্র। ট্রাম্প দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এখনো বিদেশে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে।

গত মে মাসে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে শুল্ক কমিয়ে একধরনের বাণিজ্যিক স্বস্তি সৃষ্টি করেছিল। চীন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে, আর যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করে।

এই সমঝোতার পর দুই দেশের বাজারে উল্লাস দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা আবার সেই স্বস্তিকে ধ্বংস করে দিল।