সড়কে চাপ কমাতে নৌ-রেলপথের ব্যবহার বাড়াতে হবে: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির
শুধু সড়ক প্রশস্ত করলেই যানজট কমবে না, বরং সড়কের ওপর চাপ কমাতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ২০ শতাংশ রেল ও নৌপথে স্থানান্তর করতে হবে বলে জানিয়েছেন রেল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে সড়ক ভবনে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘শুধু ৮ লেন বা ১০ লেন করলেই যানজট কমবে—এই ধারণা ভুল। সড়ক বড় করলে যানবাহনও বাড়ে। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাখিল করা প্রস্তাব অনুসারে যোগাযোগ খাতে ‘মাল্টিমোডাল’ নীতি অনুসরণ করব। সড়ক, রেলপথ ও নৌপথকে সমন্বিতভাবে দেখতে হবে। আমাদের পরিকল্পনা হলো, সড়কের ওপর চাপ কমাতে ২০ শতাংশ পণ্য ও যাত্রী রেল এবং নৌপথে নিয়ে আসা।’’
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নেওয়া অপরিকল্পিত প্রকল্পের কঠোর সমালোচনা করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘নানার বাড়িতে পিঠা খেতে যাওয়ার জন্য আর কোনো রাস্তা করা হবে না। রাজনৈতিক বিবেচনায় আর কোনো ‘ফরমায়েশি’ সড়ক হবে না।’’
রেলে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, রেলে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক পদ সৃষ্টি করে এই দুর্নীতি পথ তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় প্রকল্প নিয়েছে যা গুরুত্বহীন। মানুষের কোন কাজে আসে না। এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার লেন, চট্টগ্রাম দোহাজারী লেনে ভয়াবহ দুর্নীতি হয়েছে। সেগুলোর ইপোর্ট নিতে পারছি না আমরা। আমাদের যথেষ্ট লোকোমোটিভ নেই, কোচ নেই। এগুলোর পেছনে দুর্নীতি গেঁথে ছিল। আমরা সেগুলো থেকে সরে আসছি।
তিনি বলেন, মাতারবাড়িতে একটা রাস্তা নেওয়া হয়েছে প্রতি কিলোমিটার ব্যয় ৪৭৬ কোটি টাকা। এগুলোতো আমরা বহন করতে পারব না। যেটা আমরা জাতি হিসেবে ইপোর্ট করতে পারব সেটা করব। আমাদেরকে ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি দূর করতে হবে। ভূমি অধিগ্রহণ কমাতে হবে। এটা সময় নষ্ট করে।
কালুরঘাট সেতুর কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন কালুরঘাট সেতুর কাজ চলমান আছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশের নদী প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। এজন্য অনেক কিছু চিন্তা করে করতে হবে। যেমন এমনও ব্রিজ হয়েছে নিচে দিয়ে জাহাজ যেতে পারে না। সেগুলো আবার ঠিক করা হয়েছে। আমরা নদী শাসন করে করতে চাচ্ছি কালুরঘাট ব্রিজ। আমাদের সময়ে ভালো একটা কিছু দৃশ্যমান হবে আশা করি।
সওজ’র কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, আমরা ৩৭৫ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেছি। তাহলে ১২০০ কোটি, ২ হাজার কোটি টাকাকে মাত্র বলা যাবে না। এসব চিন্তা বাদ দিতে হবে। জমিদার মানে পুকুর, নারকেল গাছ, সুপারি গাছ থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। এসব চিন্তাধারা বাদ৷ এখন রাস্তার জন্য জমি চাইলেই পাওয়া যাবে এমন না, জমির আরও নানাবিধ ব্যবহার আছে।















