বাতিল হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সব মামলা, দায়মুক্তি পাচ্ছেন আসামিরা
সরকার সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আবারও সংশোধন করে এরই মধ্যে রহিত হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ)-এর অধীনে থাকা সব মামলা বাতিল করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ডিএসএ-তে সাজাপ্রাপ্ত এবং অভিযুক্ত সবাই মামলার দায় থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। এছাড়া, তদন্তাধীন সব কার্যক্রমও বাতিল বলে গণ্য হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে মোট ১১টি অধ্যাদেশ এবং তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সরকার ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ এর ধারা ৫০ সংশোধন করে নতুন একটি উপ-ধারা (৪ক) যুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
নতুন যুক্ত হওয়া উপ-ধারা (৪ক)-তে বলা হয়েছে: রহিত হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ধারা ২১, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ৩১ এবং উহাদের ধারায় বর্ণিত অপরাধ সংঘটনে সহায়তার অপরাধে কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনালে নিষ্পন্নাধীন কোনো মামলা বা অন্যান্য কার্যধারা অথবা কোনো পুলিশ অফিসার বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তাধীন মামলা বা কার্যক্রম বাতিল হবে এবং উহাদের বিষয়ে আর কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না।
একই সঙ্গে, এসব ধারার অধীনে কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত দণ্ড ও জরিমানাও বাতিল বলে গণ্য হবে।
বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ২০১৮ সালের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অধীনে হওয়া সব মামলা বাতিল করা হয়েছে। এর ফলস্বরূপ, ওই আইনে সাজাপ্রাপ্ত ও মামলায় অভিযুক্ত সবাই মামলার দায় থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।
ভার্চুয়াল জগতে অপরাধ দমনের উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। তবে এর বেশ কিছু ‘নিবর্তনমূলক’ ধারা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০২৩ সালে সরকার এটি বাতিল করে প্রথমে সাইবার নিরাপত্তা আইন এবং পরে অন্তর্বর্তী সরকার এসে সেটিকে আরও সংশোধন করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি করে।
বিশেষজ্ঞ মহল এই সিদ্ধান্তকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।