০১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

গণমাধ্যমের পোর্টাল বিনা নোটিশে বন্ধ করা হবে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলে

নিউজ ডেস্ক

অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার অব্যাহত থাকলে বিনা নোটিশেই অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক বৈঠকে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ফয়েজ তৈয়্যব অভিযোগ করে বলেন, সরকার একাধিকবার সতর্ক করার পরও অনেক নামকরা অনলাইন পোর্টাল এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা গতকাল পর্যন্ত যেসব পোর্টাল চিহ্নিত করেছি, তার মধ্যে রয়েছে- যুগান্তর, ভোরের কাগজ, ইনকিলাব, মানবকণ্ঠ, জাগো নিউজ, বাংলাদেশ ২৪ অনলাইন, আওয়ার নিউজ ২৪। এসব পোর্টাল এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট ও জুয়ার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এটা চলতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “এবার আর কোনো নোটিশ নয়। একাধিকবার সতর্ক করার পরও যারা থামেনি, তাদের বিরুদ্ধে যেকোনো সময় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পোর্টালগুলো বিনা নোটিশেই বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

বৈঠকে ফয়েজ তৈয়্যব জানান, অনলাইন জুয়া চক্রগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের প্রযুক্তি-নির্ভর নজরদারি চলমান রয়েছে। ওয়েব ক্রলিংয়ের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে চিহ্নিত করা হচ্ছে জুয়ায় ব্যবহৃত এমএফএস (মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস) অ্যাকাউন্ট ও জড়িত ওয়েব পোর্টালের তালিকা।

তার তথ্য মতে, মে ২০২৪ থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর এবং ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েবসাইট লিংক শনাক্ত করা হয়েছে।

তবে জুয়া চক্রগুলোর কৌশলও অত্যন্ত জটিল। তিনি বলেন, “একটি সাইট বা নম্বর ব্লক করলেই নতুন নামে বা আইপি পরিবর্তন করে আবারও ফিরে আসে। এমনকি অনেকেই অ্যাপ বানিয়ে .apk ফরম্যাটে ছড়িয়ে দিচ্ছে, যেগুলো প্লে-স্টোরে না থাকায় ট্র্যাক করাও কঠিন।”

এ ধরনের সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান ফয়েজ তৈয়্যব। তার ভাষায়, “জুয়া ও পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধ প্রতিরোধে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যদেরকেও জুয়ার গ্রুপগুলোতে প্লেয়ার হিসেবে প্রবেশ করিয়ে ভেতরের খবর বের করতে হবে।”

সভায় বিটিআরসি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, এমএফএস অপারেটর, মোবাইল কোম্পানি, বিএফআইইউ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সব পক্ষকে একযোগে কাজ করার তাগিদ দেন ফয়েজ তৈয়্যব।

তার মতে, “জুয়া, পর্ন, অনিরাপদ কনটেন্ট—এসব প্রতিরোধে একক কোনো প্রতিষ্ঠান পারবে না। মিডিয়া, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান—সবাইকে একসঙ্গে এগোতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১১:১৬:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
৩৭

গণমাধ্যমের পোর্টাল বিনা নোটিশে বন্ধ করা হবে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলে

আপডেট: ১১:১৬:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার অব্যাহত থাকলে বিনা নোটিশেই অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক বৈঠকে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ফয়েজ তৈয়্যব অভিযোগ করে বলেন, সরকার একাধিকবার সতর্ক করার পরও অনেক নামকরা অনলাইন পোর্টাল এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা গতকাল পর্যন্ত যেসব পোর্টাল চিহ্নিত করেছি, তার মধ্যে রয়েছে- যুগান্তর, ভোরের কাগজ, ইনকিলাব, মানবকণ্ঠ, জাগো নিউজ, বাংলাদেশ ২৪ অনলাইন, আওয়ার নিউজ ২৪। এসব পোর্টাল এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট ও জুয়ার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এটা চলতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “এবার আর কোনো নোটিশ নয়। একাধিকবার সতর্ক করার পরও যারা থামেনি, তাদের বিরুদ্ধে যেকোনো সময় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পোর্টালগুলো বিনা নোটিশেই বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

বৈঠকে ফয়েজ তৈয়্যব জানান, অনলাইন জুয়া চক্রগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের প্রযুক্তি-নির্ভর নজরদারি চলমান রয়েছে। ওয়েব ক্রলিংয়ের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে চিহ্নিত করা হচ্ছে জুয়ায় ব্যবহৃত এমএফএস (মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস) অ্যাকাউন্ট ও জড়িত ওয়েব পোর্টালের তালিকা।

তার তথ্য মতে, মে ২০২৪ থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর এবং ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েবসাইট লিংক শনাক্ত করা হয়েছে।

তবে জুয়া চক্রগুলোর কৌশলও অত্যন্ত জটিল। তিনি বলেন, “একটি সাইট বা নম্বর ব্লক করলেই নতুন নামে বা আইপি পরিবর্তন করে আবারও ফিরে আসে। এমনকি অনেকেই অ্যাপ বানিয়ে .apk ফরম্যাটে ছড়িয়ে দিচ্ছে, যেগুলো প্লে-স্টোরে না থাকায় ট্র্যাক করাও কঠিন।”

এ ধরনের সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান ফয়েজ তৈয়্যব। তার ভাষায়, “জুয়া ও পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধ প্রতিরোধে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যদেরকেও জুয়ার গ্রুপগুলোতে প্লেয়ার হিসেবে প্রবেশ করিয়ে ভেতরের খবর বের করতে হবে।”

সভায় বিটিআরসি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, এমএফএস অপারেটর, মোবাইল কোম্পানি, বিএফআইইউ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সব পক্ষকে একযোগে কাজ করার তাগিদ দেন ফয়েজ তৈয়্যব।

তার মতে, “জুয়া, পর্ন, অনিরাপদ কনটেন্ট—এসব প্রতিরোধে একক কোনো প্রতিষ্ঠান পারবে না। মিডিয়া, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান—সবাইকে একসঙ্গে এগোতে হবে।