মাদকচক্রের বিরুদ্ধে ব্রাজিল পুলিশের ভয়াবহ অভিযান, নিহত ৬৪
ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরোর বস্তিগুলোতে পুলিশের ব্যাপক অভিযানে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) শহরের উত্তরাঞ্চলের কমপ্লেক্সো দা পেনহা ও কমপ্লেক্সো দো আলেমাঁও এলাকায় কুখ্যাত রেড কমান্ড গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে পুলিশ এই ভয়াবহ অভিযান পরিচালনা করে। স্থানীয় অধিবাসীরা এলাকাটিকে ‘যুদ্ধের ময়দান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। খবর বিবিসির।
রাজ্য গভর্নর ক্লাউডিও কাস্ত্রোর নির্দেশে প্রায় দুই হাজার ৫০০ সশস্ত্র পুলিশ সদস্য অভিযানে অংশ নেন। তাদের সঙ্গে ছিল হেলিকপ্টার, ড্রোন, সাঁজোয়া যান এবং ব্যারিকেড ভাঙার যন্ত্র। গভর্নর কাস্ত্রো এটিকে ‘রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ৬০ জন সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্য এবং চারজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এই অভিযান চলে।
গভর্নর কাস্ত্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বলেন, গ্যাং-নিয়ন্ত্রিত ড্রোন পুলিশের উপর বোমা ফেলছিল। তিনি এটিকে ‘মাদক সন্ত্রাস’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
রিওর পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে দুইশো কেজিরও বেশি মাদক এবং ডজনখানেক আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে অনেকেই পারারাজ্যের একটি গ্যাংয়ের সদস্য, যারা বর্তমানে রিও ডি জেনিরোতে আত্মগোপন করেছিল।
যদিও সরকার এই অভিযানকে মাদক চক্র দমনের পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, তবে ব্রাজিলের রাজনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। ব্রাজিলের কংগ্রেসম্যান হেনরিকে ভিয়েরা অভিযোগ করেন, সরকার এই বস্তিগুলোকে গুলি চালানো ও হত্যার অনুমোদন দিয়ে ‘শত্রু অঞ্চলে’ পরিণত করছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এই সহিংসতাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়ে দ্রুত তদন্ত ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। রিও রাজ্য আইনসভা মানবাধিকার কমিশনের প্রধান দানি মন্টেইরো বলেন, রিওর ফাভেলা বা বস্তিগুলো আবারও যুদ্ধের মঞ্চে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিতে বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্টের আগে এ ধরনের বৃহৎ আকারের পুলিশি অভিযান প্রায়ই দেখা যায়। আগামী নভেম্বরে উত্তরের শহর বেলেমে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।





















