১১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

তিন দফা দাবিতে শহীদ মিনার থেকে শিক্ষকদের আলটিমেটাম

নিউজ ডেস্ক

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা টানা পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ (১৬ অক্টোবর) দাবি আদায় না হলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা। বিকাল ৫টার মধ্যে যদি প্রধান উপদেষ্টা দাবি না মানেন, তাহলে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতা দেলোয়ার হোসেন আজিজী।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সভা শেষে এ ঘোষণা দেন আজিজী। এজন্য বিকাল ৫টা পর্যন্ত যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা স্থগিত করেছেন তারা।

এর আগে শিক্ষা উপদেষ্টাকে শিক্ষক নেতা আজিজী ১০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রজ্ঞাপনটা এমনভাবে করতে হবে যে এখনই ২০ শতাংশের কথা উল্লেখ থাকবে। তবে শিক্ষা উপদেষ্টা তাদের ৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছিলেন, আমি শুরু থেকেই শিক্ষকদের বেতন, প্রশিক্ষণ ও মর্যাদা বৃদ্ধির পক্ষে সোচ্চার। আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মীরাও এই বিষয়ে সহানুভূতিশীল।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে শিক্ষকদের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল উপদেষ্টার সঙ্গে সভায় বসেন।

দুপুর ১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী জড়ো হয়েছেন। তারা স্লোগান দিচ্ছেন, ‘২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, দিতে হবে দিতে হবে’, ‘বাংলার শিক্ষক, এক হও এক হও’, ‘শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন, মানি না মানি না’ প্রভৃতি।

দাবি আদায় না হলে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ দুপুরে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনমুখী ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল। কিন্তু সেটি বিকাল ৫টা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।

এর আগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের যুগ্ম সদস্যসচিব আবুল বাশার।

শিক্ষকরা জানান, আমাদের কর্মবিরতি চলবে। ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত কোনো শিক্ষক শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন না।

মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ও পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে সারা দেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল–কলেজে ক্লাস কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, সরকারের প্রস্তাবিত বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির হার ‘অপর্যাপ্ত ও অবাস্তব’। তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বজনীন বদলি নীতি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

গত রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ শিক্ষকদের সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সংগঠনের নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৬:৫৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
২৪

তিন দফা দাবিতে শহীদ মিনার থেকে শিক্ষকদের আলটিমেটাম

আপডেট: ০৬:৫৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা টানা পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ (১৬ অক্টোবর) দাবি আদায় না হলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা। বিকাল ৫টার মধ্যে যদি প্রধান উপদেষ্টা দাবি না মানেন, তাহলে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতা দেলোয়ার হোসেন আজিজী।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সভা শেষে এ ঘোষণা দেন আজিজী। এজন্য বিকাল ৫টা পর্যন্ত যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা স্থগিত করেছেন তারা।

এর আগে শিক্ষা উপদেষ্টাকে শিক্ষক নেতা আজিজী ১০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রজ্ঞাপনটা এমনভাবে করতে হবে যে এখনই ২০ শতাংশের কথা উল্লেখ থাকবে। তবে শিক্ষা উপদেষ্টা তাদের ৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছিলেন, আমি শুরু থেকেই শিক্ষকদের বেতন, প্রশিক্ষণ ও মর্যাদা বৃদ্ধির পক্ষে সোচ্চার। আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মীরাও এই বিষয়ে সহানুভূতিশীল।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে শিক্ষকদের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল উপদেষ্টার সঙ্গে সভায় বসেন।

দুপুর ১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী জড়ো হয়েছেন। তারা স্লোগান দিচ্ছেন, ‘২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, দিতে হবে দিতে হবে’, ‘বাংলার শিক্ষক, এক হও এক হও’, ‘শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন, মানি না মানি না’ প্রভৃতি।

দাবি আদায় না হলে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ দুপুরে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনমুখী ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল। কিন্তু সেটি বিকাল ৫টা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।

এর আগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের যুগ্ম সদস্যসচিব আবুল বাশার।

শিক্ষকরা জানান, আমাদের কর্মবিরতি চলবে। ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত কোনো শিক্ষক শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন না।

মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ও পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে সারা দেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল–কলেজে ক্লাস কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, সরকারের প্রস্তাবিত বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির হার ‘অপর্যাপ্ত ও অবাস্তব’। তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বজনীন বদলি নীতি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

গত রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ শিক্ষকদের সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সংগঠনের নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।