অনশন ভেঙেছেন কুয়েটের শিক্ষার্থীরা, ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছে উল্লাস
📍 খুলনা প্রতিনিধি
🗓 ১১ এপ্রিল ২০২৫
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান অনশনরত শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এর মাধ্যমে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে উল্লাস ও বিজয়ের আনন্দ।
এর আগে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি বার্তা শিক্ষার্থীদের সামনে পড়ে শোনান, যেখানে জানানো হয়, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্যে থেকে একজনকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
এই ঘোষণার পরই স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার এলাকায় জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা আনন্দে ফেটে পড়েন এবং সেখান থেকে এক বিশাল আনন্দমিছিল বের করে ক্যাম্পাসজুড়ে।
‘আমরা জিতেছি’: কুয়েট ১৯ ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থীদের বার্তা
‘কুয়েট ১৯’ নামের ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থীরা লিখেছে, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আমরা জিতেছি। আমার ভাইরা জিতেছে। মাসুদ পদত্যাগ করেছে!’
এর আগে গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন ও অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা তখনও তাঁদের দাবিতে অনড় থাকেন।
প্রশাসনের সিদ্ধান্ত: বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও হল খোলা
একই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা বসে, যেখানে গত ১৪ এপ্রিল ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। বিকেল থেকেই খুলে দেওয়া হয় ছাত্রদের ছয়টি ও ছাত্রীদের একটি আবাসিক হল।
আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্তও বহাল রাখা হয়।
আন্দোলনের পটভূমি
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েট ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ হয়, যাতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরদিন একাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা এবং সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সবধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের ঘোষণা আসে। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল বন্ধ ঘোষণা করে।
এরপর ১৩ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান শুরু করে। পরবর্তীতে ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় উত্তেজনা আরও বাড়ে এবং শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে। দাবি পূরণ না হওয়ায় গত সোমবার থেকে অনশন শুরু হয়।