৩৩ কোটি টাকার ‘চুরি’! ২০ ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ—সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে দুদকের বোমা ফাঁস!
সিএসআর ফান্ডের নামে ২০টি ব্যাংক থেকে অর্থ আদায়
দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল–এর বিরুদ্ধে ৩৩ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের বিস্ফোরক অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)–এর দায়ের করা মামলায় উঠে এসেছে, ২০টি বেসরকারি ব্যাংকের করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (CSR) ফান্ড থেকে এই বিপুল অঙ্কের অর্থ সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে তুলে নেয়া হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা
সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসনের পদে থাকা সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই অর্থ আদায় করেন। তাঁর সহযোগী হিসেবে নাম উঠেছে বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের।
ব্যাংকারদের অভিযোগ—চাপে পড়ে টাকা দিয়েছি!
দুদক জানায়, ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া এই অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ব্যাংককে একটি নির্দিষ্ট চিঠির মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। এ চিঠি পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (BAB)।
সবচেয়ে বেশি টাকা দিয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, মোট প্রায় ১০ কোটি টাকা। বাকি ১৮টি ব্যাংক দিয়েছে ৫ লাখ থেকে আড়াই কোটি পর্যন্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে হু’র পদেও পৌঁছানো!
দুদক আরও জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক পদে ভুয়া পরিচয়ে আবেদন করে নির্বাচিত হন সায়মা ওয়াজেদ। সেখানে তিনি নিজেকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেক বিএসএমএমইউ) শিক্ষক বলে দাবি করেছিলেন, যা ছিল মিথ্যা।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বক্তব্য
প্রথম আলোকে দেওয়া বক্তব্যে একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্পষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী সিএসআর তহবিল খরচ হয় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু অভিযোজনে। কিন্তু সূচনা ফাউন্ডেশনের জন্য এই নিয়মকে পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়।
সূচনা ফাউন্ডেশনকে টাকা দেওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে
ইউনিয়ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউসিবিএল, সিটি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংক।
দুদক জানিয়েছে
মামলার তদন্ত এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। প্রমাণ মিললে বড় ধরনের আইনানুগ পদক্ষেপ আসতে পারে, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আরও বড় ঝড় তুলবে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।
এই প্রতিবেদনটি শেয়ার করে আপনার মতামত জানান—এটা কি শুধুই দুর্নীতি, নাকি ক্ষমতার পৃষ্ঠপোষকতায় চলা সুপরিকল্পিত লুটপাট?