০১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড; আহত ২৫

নিউজ ডেস্ক

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ আগুন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় আশপাশের ১০ থেকে ১২ টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এখনও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলা সদরের ওয়াবদা মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে এক ঘন্টার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এ সংঘর্ষে আহতরা হলেন, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মিনাজুর রহমান লিপন,লিয়াকত মোল্লা, রফিকুল ইসলাম,টিটু, জব্বার,ইমদাদুল হক,লাভলুসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। আহতদের বোয়ালমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় ও দলীয় সুত্রে জানাগেছে, রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে। এছাড়া সম্প্রতি বিএনপির মনোনয়ন ও উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরমধ্যে ৭ নভেম্বর বিপ্লবী ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দুই গ্রুপ পৃথক সমাবেশ র‍্যালীর আয়োজন করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালমারীর ওয়াবদা মোড়ে হারুন শফিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচির আয়োজন করেন শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপ। অপরদিকে চৌরাস্তা এলাকায় একই কর্মসূচির আয়োজন করে নাসিরুল ইসলাম গ্রুপ। বিকেলে দুই পক্ষের লোকজন বোয়ালমারী বাজারে জড়ো হচ্ছিলো। উভয় পক্ষের শত শত মানুষ যাওয়া আসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিকাল সাড়ে চারটার দিকে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের পক্ষের শতশত মানুষ লাঠিশোটা ইট পাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বোয়ালমারী বাজারের ওয়াবদা এলাকায় শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু সমর্থিতদের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা আশেপাশের অন্তত ৮ থেকে ১০ টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। তারা অন্তত পনেরোটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় এক ঘন্টা সময় ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চলে। এ সময় ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন অনেকে এবং অন্যরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সরে যান।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাতে আসলে বিক্ষুব্ধদের মুখে পড়ে ফিরে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক ও নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু বলেন, নাসির গ্রুপ সমর্থিত নেতাকর্মীরা বহিরাগত লোকজন এনে আমাদের নেতাকর্মী ও অফিসে হামলা,ভাংচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নব গঠিত কমিটির সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝুনু মিয়ার সমর্থকরা উস্কানি দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ভাড়া করে এনে আমাদের ওপর হামলা চালায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লা আল মাসুম জানান, হাসপাতালে সাত জন আহত অবস্থায় আসেন। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১১:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
১৯

ফরিদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড; আহত ২৫

আপডেট: ১১:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ আগুন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় আশপাশের ১০ থেকে ১২ টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এখনও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলা সদরের ওয়াবদা মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে এক ঘন্টার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এ সংঘর্ষে আহতরা হলেন, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মিনাজুর রহমান লিপন,লিয়াকত মোল্লা, রফিকুল ইসলাম,টিটু, জব্বার,ইমদাদুল হক,লাভলুসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। আহতদের বোয়ালমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় ও দলীয় সুত্রে জানাগেছে, রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে। এছাড়া সম্প্রতি বিএনপির মনোনয়ন ও উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরমধ্যে ৭ নভেম্বর বিপ্লবী ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দুই গ্রুপ পৃথক সমাবেশ র‍্যালীর আয়োজন করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালমারীর ওয়াবদা মোড়ে হারুন শফিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচির আয়োজন করেন শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপ। অপরদিকে চৌরাস্তা এলাকায় একই কর্মসূচির আয়োজন করে নাসিরুল ইসলাম গ্রুপ। বিকেলে দুই পক্ষের লোকজন বোয়ালমারী বাজারে জড়ো হচ্ছিলো। উভয় পক্ষের শত শত মানুষ যাওয়া আসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিকাল সাড়ে চারটার দিকে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের পক্ষের শতশত মানুষ লাঠিশোটা ইট পাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বোয়ালমারী বাজারের ওয়াবদা এলাকায় শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু সমর্থিতদের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা আশেপাশের অন্তত ৮ থেকে ১০ টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। তারা অন্তত পনেরোটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় এক ঘন্টা সময় ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চলে। এ সময় ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন অনেকে এবং অন্যরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সরে যান।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাতে আসলে বিক্ষুব্ধদের মুখে পড়ে ফিরে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক ও নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু বলেন, নাসির গ্রুপ সমর্থিত নেতাকর্মীরা বহিরাগত লোকজন এনে আমাদের নেতাকর্মী ও অফিসে হামলা,ভাংচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নব গঠিত কমিটির সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝুনু মিয়ার সমর্থকরা উস্কানি দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ভাড়া করে এনে আমাদের ওপর হামলা চালায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লা আল মাসুম জানান, হাসপাতালে সাত জন আহত অবস্থায় আসেন। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।