ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনা: শান্তির নতুন আশার আলো জ্বলছে ওমানে
ওমানে শুরু হলো মধ্যস্থতাকৃত শান্তি আলোচনা
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের উত্তেজনার মাঝে অবশেষে দেখা দিয়েছে নতুন আশার আলো। ওমানের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক’ আলোচনার সূচনা হয়েছে, যা আঞ্চলিক শান্তি ও পারমাণবিক উত্তেজনা হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই আলোচনায় উভয় পক্ষ সরাসরি মুখোমুখি না হলেও, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে বার্তা বিনিময় হয়েছে। আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের বাড়তে থাকা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আনা, বন্দী বিনিময় ও কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা।
ইরানের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানিয়েছেন,
“আমার মনে হয়, আমরা আলোচনার রূপরেখার খুব কাছাকাছি। যদি পরবর্তী সপ্তাহে ভিত্তিগত সমঝোতা হয়, তা হলে বাস্তব আলোচনা শুরু হতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, এই আলোচনা শান্তিপূর্ণ ও আশাব্যঞ্জক পরিবেশে হয়েছে এবং আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল আঞ্চলিক উত্তেজনা হ্রাস, কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বন্দী বিনিময়ের বিষয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম গঠনমূলক সংলাপ
এই আলোচনাই ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদ থেকে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা। হোয়াইট হাউস জানায়,
“বিশেষ দূত উইটকফের সরাসরি যোগাযোগ আজ পারস্পরিক উপকারে পৌঁছানোর পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।”
আলোচনায় যুক্ত ছিলেন মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভেন উইটকফ, ওমানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনা এসক্রোগিমা এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচি।
সামরিক হুমকির ছায়ায় কূটনৈতিক প্রয়াস
আলোচনার পেছনে একটি হুমকিও রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন,
“সমঝোতা না হলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।”
এই বক্তব্য আলোচনার পরিবেশে চাপ সৃষ্টি করলেও ইরান এখনও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে আছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আবারও আলোচনায় বসবে উভয় পক্ষ
উভয় পক্ষ আগামী শনিবার আবার আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে। ওমান এর আগে পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তিতেও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে।
উপসংহার: সম্ভাবনার দিকেই এগোচ্ছে আলোচনার ভবিষ্যৎ
এই আলোচনা থেকে দুই দেশের মধ্যে সাময়িক সমঝোতা তৈরি হলে, তা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনীতিতে এক বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে। এটি শুধুই পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের এক সম্ভাব্য সূচনা।