টানা দুইবারের বেশি নয়, কিন্তু বিরতি দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ রাখা উচিত: বিএনপি
বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা। আজ রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে। ছবি: সাজিদ
📍নিজস্ব প্রতিবেদক
সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদসংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, টানা দুইবারের বেশি না পারলেও, বিরতি দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ রাখা উচিত। এ বিষয়ে কোনো ধরনের কড়াকড়ি চাপিয়ে দেওয়া অনুচিত হবে বলে মনে করে দলটি।
আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের আলোচনার বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার—জনগণ যদি চায়, বিরতি দিয়ে কেউ আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। এটা সংকুচিত করার যৌক্তিকতা নেই।’
মৌলিক অধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ক্ষমতার ভারসাম্য
আলোচনায় বিএনপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেন—নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসমাঈল জবিউল্লাহ, রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং মনিরুজ্জামান খান।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের মৌলিক অধিকারের পরিধি বাড়ানো নিয়ে আমরা ভিন্ন মত দিয়েছি। আমাদের মতে, রাষ্ট্রের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় মৌলিক অধিকারের আওতা নির্ধারণ করা উচিত। পরিধি যত বাড়বে, ব্যয়ও তত বাড়বে।’
ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আগের অবস্থানে ফিরে যেতে চায়। এ বিষয়ে আমরা কমিশনে নিজেদের মত স্পষ্ট করেছি।’
নারী আসন ও সাংবিধানিক কাউন্সিল প্রসঙ্গ
সংসদে নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়ে বিএনপি একমত হলেও, বর্তমান পদ্ধতি চলমান সংসদ পর্যন্ত বহাল রাখার পক্ষে দলটি। নতুন সংসদ গঠনের পর পদ্ধতি নির্ধারণে আলোচনা চায় বিএনপি।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। সালাহউদ্দিন আহমদের ভাষায়, “এটা বাস্তবায়ন হলে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত হয়ে যাবে। আমরা এতে একমত হতে পারছি না।”
“গণতন্ত্রে মতবিরোধ থাকবে”—নজরুল ইসলাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “বিএনপি পক্ষ থেকে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু বিষয়ে মত কাছাকাছি এসেছে। গণতন্ত্রে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাকশালে মতবিরোধের জায়গা নেই।”