০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

সুন্দরবনে নতুন এলাকায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাটা হচ্ছে ফায়ারলাইন

ডেস্ক নিউজ

ড্রোনের সাহায্যে সুন্দরবনের আগুনের পরিস্থিতি দেখছেন বন বিভাগের কর্মীরা। ছবি: প্রথম আলো

আগুন নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বন বিভাগ

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকালে সেখানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। বনকর্মী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ফায়ারলাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

নতুন করে আগুনের বিস্তার
ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর দেবনাথ জানিয়েছেন, ধানসাগর ও গুলিশাখালী বন টহল ফাঁড়ির মাঝামাঝি তেইশের ছিলা এলাকায় আগুন জ্বলছে। বন বিভাগ প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, তবে আগুনের বিস্তৃতি এখনো পুরোপুরি নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

আগুনের সূত্রপাত ও নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা
গতকাল শনিবার সকালে কলমতেজী বনে আগুনের সূত্রপাত হয়। বন বিভাগ, সিপিজি, ভিটিআরটি, টাইগার টিমসহ শতাধিক কর্মী দ্রুত কাজ শুরু করেন। বিকেলের মধ্যেই ফায়ারলাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। তবে পানির উৎস দূরে থাকায় ফায়ার সার্ভিসের টিম সন্ধ্যার আগে পৌঁছেও পানি ছিটাতে পারেনি। রাত ৯টা থেকে বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি দেওয়ার কাজ শুরু হয় এবং রাতভর চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

নতুন আগুনের কারণ ও স্থানীয়দের অভিযোগ
আজ সকালে কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে ধোঁয়া দেখা যায়। স্থানীয় বনজীবী আজিজুল হাওলাদার জানান, কিছু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে বারবার সুন্দরবনে আগুন লাগাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে একটি মহল শিং, মাগুরসহ জিওল মাছ ধরতে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগাচ্ছে। নতুন করে লাগা আগুন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।

ড্রোন ও জিপিআরএস ট্র্যাকিংয়ে নজরদারি
সুন্দরবন-পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানিয়েছেন, কলমতেজীতে লাগা আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। তবে নতুন করে তেইশের ছিলা এলাকায় আগুন লেগেছে, যা বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ড্রোন ও জিপিআরএস ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সুন্দরবন রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। বন বিভাগও এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এবং আগুন লাগানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৩:১০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
১৮

সুন্দরবনে নতুন এলাকায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাটা হচ্ছে ফায়ারলাইন

আপডেট: ০৩:১০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

ড্রোনের সাহায্যে সুন্দরবনের আগুনের পরিস্থিতি দেখছেন বন বিভাগের কর্মীরা। ছবি: প্রথম আলো

আগুন নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বন বিভাগ

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকালে সেখানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। বনকর্মী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ফায়ারলাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

নতুন করে আগুনের বিস্তার
ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর দেবনাথ জানিয়েছেন, ধানসাগর ও গুলিশাখালী বন টহল ফাঁড়ির মাঝামাঝি তেইশের ছিলা এলাকায় আগুন জ্বলছে। বন বিভাগ প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, তবে আগুনের বিস্তৃতি এখনো পুরোপুরি নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

আগুনের সূত্রপাত ও নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা
গতকাল শনিবার সকালে কলমতেজী বনে আগুনের সূত্রপাত হয়। বন বিভাগ, সিপিজি, ভিটিআরটি, টাইগার টিমসহ শতাধিক কর্মী দ্রুত কাজ শুরু করেন। বিকেলের মধ্যেই ফায়ারলাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। তবে পানির উৎস দূরে থাকায় ফায়ার সার্ভিসের টিম সন্ধ্যার আগে পৌঁছেও পানি ছিটাতে পারেনি। রাত ৯টা থেকে বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি দেওয়ার কাজ শুরু হয় এবং রাতভর চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

নতুন আগুনের কারণ ও স্থানীয়দের অভিযোগ
আজ সকালে কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে ধোঁয়া দেখা যায়। স্থানীয় বনজীবী আজিজুল হাওলাদার জানান, কিছু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে বারবার সুন্দরবনে আগুন লাগাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে একটি মহল শিং, মাগুরসহ জিওল মাছ ধরতে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগাচ্ছে। নতুন করে লাগা আগুন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।

ড্রোন ও জিপিআরএস ট্র্যাকিংয়ে নজরদারি
সুন্দরবন-পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানিয়েছেন, কলমতেজীতে লাগা আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। তবে নতুন করে তেইশের ছিলা এলাকায় আগুন লেগেছে, যা বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ড্রোন ও জিপিআরএস ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সুন্দরবন রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। বন বিভাগও এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এবং আগুন লাগানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।