০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের সুতার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিল বাংলাদেশ! সস্তা সুতা আর নয়, টিকবে দেশি শিল্প

ডেস্ক নিউজ

লেখা: প্রতিবেদক, ছবিঃ প্রথম আলোর সৌজন্যে 

ভারতের সস্তা সুতা দিয়ে বাজার ছেয়ে গিয়েছিল, আর এখন সেই আমদানি বন্ধ! হ্যাঁ, বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি স্থলপথে ভারতীয় সুতা আমদানির সুবিধা বন্ধ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—কেন এই সিদ্ধান্ত, আর এতে কার লাভ, কার ক্ষতি?

🎯 কেন বন্ধ করা হলো স্থলপথে সুতা আমদানি?

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ—স্থলপথে সুতা আনার সময় মিথ্যা ঘোষণা দেওয়া হতো। ৩০ কাউন্টের নামে ৮০ কাউন্টের উন্নত মানের সুতা চলে আসত। কাস্টমসের পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় এসব অনিয়ম ধরাও যেত না। ফলে ভারতীয় সস্তা সুতার সঙ্গে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন দেশীয় স্পিনিং মিল মালিকেরা।

🔍 তাহলে সমুদ্রপথে আনলে কী লাভ?

সমুদ্রপথে সুতা আমদানি হলে:

  • কেন্দ্রীয়ভাবে শুল্কায়ন করা যায়, যার ফলে অনিয়ম কমে।

  • জাহাজে আনলে পরিবহন খরচ প্রায় ১০% কম পড়ে

  • সময়ও খুব বেশি বাড়ে না—মাত্র ৩-৪ দিন বেশি লাগে।

🏭 স্থানীয় শিল্প কি এবার টিকে যাবে?

বাংলাদেশে ৫১৯টিরও বেশি স্পিনিং মিল আছে, যারা দেশের নিট কাপড়ের ৮৫-৯০% এবং ওভেন কাপড়ের ৪০% সুতা সরবরাহ করে। স্থলপথের অনিয়মে তারা হারাচ্ছিল বাজার। এখন সেই ফাঁক বন্ধ হলে দেশীয় উৎপাদনের ওপর ভরসা বাড়বে

বিটিএমএর পরিচালক খোরশেদ আলম বলছেন, “স্থলপথ বন্ধ হওয়ায় অতিরিক্ত সুতা আমদানির অপব্যবহার বন্ধ হবে। এতে দেশি উৎপাদকরা কিছুটা হলেও বাঁচবে।

⚠️ তবে চ্যালেঞ্জও আছে!

  • দেশীয় স্পিনিং মিলগুলো গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে।

  • উৎপাদন ক্ষমতার ৫০% ব্যবহারেই সীমাবদ্ধ।

  • গ্যাসের দাম ১৫০-১৭৮% বেড়েছে গত দুই বছরে।

এই অবস্থায় আমদানি পুরো বন্ধ করলে স্থানীয় চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে।

📌 শেষ কথা

স্থলপথ বন্ধ করে ভারতীয় সুতার স্রোত কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে একদিকে যেমন দেশীয় শিল্পের জন্য সুরক্ষা বেষ্টনী তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারও পাচ্ছে নিয়ন্ত্রিত আমদানির সুযোগ। তবে স্থানীয় উৎপাদন সক্ষমতা না বাড়ালে এই সুযোগও বড় ক্ষতিতে পরিণত হতে পারে।

সুতা আসছে না—কিন্তু এখন সময় দেশীয় শিল্পের জেগে ওঠার।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১১:৩২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের সুতার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিল বাংলাদেশ! সস্তা সুতা আর নয়, টিকবে দেশি শিল্প

আপডেট: ১১:৩২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

লেখা: প্রতিবেদক, ছবিঃ প্রথম আলোর সৌজন্যে 

ভারতের সস্তা সুতা দিয়ে বাজার ছেয়ে গিয়েছিল, আর এখন সেই আমদানি বন্ধ! হ্যাঁ, বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি স্থলপথে ভারতীয় সুতা আমদানির সুবিধা বন্ধ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—কেন এই সিদ্ধান্ত, আর এতে কার লাভ, কার ক্ষতি?

🎯 কেন বন্ধ করা হলো স্থলপথে সুতা আমদানি?

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ—স্থলপথে সুতা আনার সময় মিথ্যা ঘোষণা দেওয়া হতো। ৩০ কাউন্টের নামে ৮০ কাউন্টের উন্নত মানের সুতা চলে আসত। কাস্টমসের পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় এসব অনিয়ম ধরাও যেত না। ফলে ভারতীয় সস্তা সুতার সঙ্গে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন দেশীয় স্পিনিং মিল মালিকেরা।

🔍 তাহলে সমুদ্রপথে আনলে কী লাভ?

সমুদ্রপথে সুতা আমদানি হলে:

  • কেন্দ্রীয়ভাবে শুল্কায়ন করা যায়, যার ফলে অনিয়ম কমে।

  • জাহাজে আনলে পরিবহন খরচ প্রায় ১০% কম পড়ে

  • সময়ও খুব বেশি বাড়ে না—মাত্র ৩-৪ দিন বেশি লাগে।

🏭 স্থানীয় শিল্প কি এবার টিকে যাবে?

বাংলাদেশে ৫১৯টিরও বেশি স্পিনিং মিল আছে, যারা দেশের নিট কাপড়ের ৮৫-৯০% এবং ওভেন কাপড়ের ৪০% সুতা সরবরাহ করে। স্থলপথের অনিয়মে তারা হারাচ্ছিল বাজার। এখন সেই ফাঁক বন্ধ হলে দেশীয় উৎপাদনের ওপর ভরসা বাড়বে

বিটিএমএর পরিচালক খোরশেদ আলম বলছেন, “স্থলপথ বন্ধ হওয়ায় অতিরিক্ত সুতা আমদানির অপব্যবহার বন্ধ হবে। এতে দেশি উৎপাদকরা কিছুটা হলেও বাঁচবে।

⚠️ তবে চ্যালেঞ্জও আছে!

  • দেশীয় স্পিনিং মিলগুলো গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে।

  • উৎপাদন ক্ষমতার ৫০% ব্যবহারেই সীমাবদ্ধ।

  • গ্যাসের দাম ১৫০-১৭৮% বেড়েছে গত দুই বছরে।

এই অবস্থায় আমদানি পুরো বন্ধ করলে স্থানীয় চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে।

📌 শেষ কথা

স্থলপথ বন্ধ করে ভারতীয় সুতার স্রোত কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে একদিকে যেমন দেশীয় শিল্পের জন্য সুরক্ষা বেষ্টনী তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারও পাচ্ছে নিয়ন্ত্রিত আমদানির সুযোগ। তবে স্থানীয় উৎপাদন সক্ষমতা না বাড়ালে এই সুযোগও বড় ক্ষতিতে পরিণত হতে পারে।

সুতা আসছে না—কিন্তু এখন সময় দেশীয় শিল্পের জেগে ওঠার।